সিদ্ধিরগঞ্জে কিশোর গ্যাং ও মাদক চক্রের দৌরাত্ম্য আতঙ্কে এলাকার সাধারণ মানুষ!

প্রকাশিত: 15 Oct 2025, 14:32
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা এলাকাবাসীর! নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন পাইনাদী মধ্যেপাড়া সিআই খোলার নতুন মসজিদের ৩ নম্বর গলির পাশে বালুর মাঠ ও তার আশেপাশে চলছে ভয়াবহ মাদক বাণিজ্য ও কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা। অভিযোগ উঠেছে বিএনপির এক নেতা সাগরের নাম বেচে এক পাতি নেতার কাদির পিতা সিরাজুল ইসলামের ছেলের শেল্টারে গড়ে উঠেছে এই মাদকের আস্তানা, যার নেতৃত্ব দিচ্ছে কুখ্যাত মাদক সম্রাট ‘চার্চ’। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুলিশের নিরব ভূমিকা ও কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে এই মাদক সাম্রাজ্য দিন দিন আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সিদ্ধিরগঞ্জের প্রায় প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় এখন কিশোর গ্যাংদের অবাধ বিচরণ। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সিআই খোলা ম্যানচেস্টার ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের গলিতে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গ্যাং সদস্যরা মাদক সেবন ও আড্ডায় মেতে থাকে। প্রায়ই এদের কারণে সংঘর্ষ, মারামারি ও বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটছে, যা সাধারণ মানুষকে আতঙ্কগ্রস্ত করে তুলেছে। একাধিকবার পুলিশকে জানানো হলেও উল্লেখযোগ্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। তারা বলেন, এই এলাকায় নিয়মিত টহল না থাকায় কিশোর গ্যাং বাহিনী দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। প্রতিবাদ করতে গেলেই হামলা বা হুমকির শিকার হতে হয়। পাইনাদী সিআই খোলা এলাকার এক ভবন মালিক বলেন, “আমরা যেন নিজেদের এলাকায় বন্দি হয়ে গেছি। কিশোর গ্যাং সদস্যদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছি। কিছু বললেই তারা দলবল নিয়ে হামলা চালায়।” এলাকাবাসী তাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অধিকাংশ পরিবার বিভিন্ন জেলা থেকে এসে এখানে বসবাস শুরু করলেও এখন তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তারা প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার, র‍্যাব-১১ ও ডিবি পুলিশের জরুরি পদক্ষেপ দাবি করেছেন। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ শাহিনুর আলম বলেন, পুরো সিদ্ধিরগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ সর্বদা কাজ করছে। তবে জনগণ সচেতন না হলে একা পুলিশের পক্ষে মাদক, সন্ত্রাস বা কিশোর গ্যাং নির্মূল করা সম্ভব নয়। নাগরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। তিনি আরও জানান, র‍্যাব ও ডিবি পুলিশকে বিষয়গুলো অবগত করলে যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) মোঃ হাসিনুজ্জামান বলেন, কোনো কিশোর গ্যাং বা মাদকচক্রকে ছাড় দেওয়া হবে না। সংশ্লিষ্ট এলাকায় পুলিশের টহল বাড়ানো হবে এবং অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে। এলাকাবাসী জোর দাবি জানিয়েছেন! কিশোর গ্যাং ও মাদকচক্রের মূল হোতা এবং শেল্টারদাতাদের গ্রেফতার করে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। তাদের মোবাইল কললিস্ট পরীক্ষা করে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য ডিলারদের শনাক্ত ও গ্রেফতার করা হোক। মাদকের আশ্রয়দাতা ও রাজনৈতিক প্রভাবশালীদেরও আইনের আওতায় আনা হোক। এলাকাবাসীর আহ্বান! আমরা নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করছি এখনই যদি এই মাদক ও কিশোর গ্যাং চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে ভবিষ্যতে এই এলাকা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে। রিপোর্ট জয়নুল ইসলাম নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি।
📘 ফেসবুক ▶️ ইউটিউব